অ্যাভোক্যাডো (Avocado) খাওয়ার উপকারিতা কি

অ্যাভোক্যাডো (Avocado) একটি আমিরিকান ফল, শুধু ফল বললে ভুল হতে পারে, ফলের পাশাপাশি চমৎকার সব্জিও বটে।আমেরিকানরা এটাকে ফল ও সবজী উভয়ভাবেই খেয়ে থাকে। আকারে দেখতে অনেকটা লেবু বা পেঁপের মতো এই ফলের আছে বিশেষ কিছু পুষ্টিগুন ও ঔষধী গুনাগুন। আজকে পুষ্টিগুণের নিয়মানুসারে অ্যাভোক্যাডো (Avocado) খাওয়ার উপকারিতা জানিয়ে দিবো।

অ্যাভোক্যাডোর (Avocado) পুষ্টিগুন

ভিটামিন ও মিনারেলে ভরপুর অ্যাভোক্যাডো (Avocado) ফলের পুষ্টিগুন সম্পর্কে জানা খুব দরকার। অগনিত খাদ্যগুনে ভরা ১০০ গ্রাম অ্যাভোক্যাডোতে রয়েছে-

১৬০ কিলোক্যালোরি খাদ্যশক্তি, শরকরা-৮.৫৩ গ্রাম, চিনি- ০.৬৬ গ্রাম, আঁশ- ৬.৭ গ্রাম, স্নেহ- ১৪.৬৬ গ্রাম, প্রোটিন- ২ গ্রাম, ভিটামিন এ, বি১,বি২,বি৩, বি৫, বি৬,বি৯, সি, ই ও ভিটামিন কে পর্যাপ্ত পরিমানে আছে। খনিজ পদার্থের মধ্যে- ক্যালসিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, ফসফরাস, পটাশিয়াম, সোডিয়াম ও জিঙ্ক পাওয়া যায় প্রচুর। কি নেই অ্যাভোক্যাডোতে?

অ্যাভোক্যাডোর (Avocado) উপকারিতা

অ্যাভোক্যাডো (Avocado) ফলের উপকারিতাও অবিশ্বাস্য রকমের, বিশেষ করে হৃদরোগে আক্রান্ত হার্টের রোগীদের জন্য অ্যাভোক্যাডো (Avocado) খুব উপকারি। হার্টের স্পন্দন স্বাভাবিক, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রন, ট্রাইগ্লিসারাইড কমাতে এবং পূনরায় হার্ট এ্যাটাক বা ষ্ট্রোকের আশংকা এড়াতে সহায়তা করে।

অ্যাভোক্যাডোতে প্রচুর ফাইবার থাকায় হজম শক্তি বৃদ্ধি করে, কোষ্ঠ্যকাঠিন্যের সমস্যা দূর করে, ভিটামিন বি থাকার ফলে শরীরের রোগ জীবানু ধ্বংস করে, এমনকি ক্যান্সারের মতো জীবানুর বিরোদ্ধে লড়তে সক্ষম অ্যাভোক্যাডোতে থাকা ভিটামিন সি ও ই।

অ্যাভোক্যাডোতে আছে পর্যাপ্ত ম্যাগনেসিয়াম, তাই অনিদ্রায় ভুগতেছেন যারা তাদের জন্য খুব উপকারি। নিয়মিত অ্যাভোক্যাডো খেলে ঘুম ভাল হয়। ডায়েট চার্টে অ্যাভোক্যাডো থাকলে অতিরিক্ত খবারের প্রয়োজন হয়না, তাই ওজন নিয়ন্ত্রন করার ইচ্ছা যাদের আছে তারা নিয়মিত অ্যাভোক্যাডো খেতে পারেন। এতে শারীরিক ওজন কমাতে সহায়তা করবে।

অ্যাভোকাডোতে দুটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ক্যারোটিনয়েড থাকে- ১. লুটেন এবং ২. জেক্সানথিন। চোখের ছানি রোধ করতে এই দুটি উপাদান খুব গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখে। অ্যাভোকাডো খাওয়ার ফলে চোখের ছানি পড়া থেকে বাচতে পারবেন।

চুলের যত্নেও অ্যাভোকাডো খুব কার্যকর, ভিটামিন বি৫ চুল ও ত্বকের লাবন্য ধরে রাখতে সাহায্য করে।

অ্যাভোকাডোর ঔষধী গুনাগুন

অ্যাভোকাডো গাছের কাঁচা ও শুষ্ক পাতা, বীজসহ ফল ও পাতা থেকে আহরীত তেল ঔষধ হিসাবে ব্যবহৃত হয়। অ্যাভোকাডো ফলের বহিস্ত্বক থেকে আহরিত তেলে প্রধানতঃ ফ্যাটি আসিড ওলেয়িক, লিনোলেয়িক এসিড, পালমিটিক, টেকোফেরল, লিকুইড ভিটামিন ই পাওয়া যায়।

অ্যাভোকাডোর তেলের কার্যকারিতা কি

ত্বকের শুষ্কতা, খসখসে ভাব, ত্বকের ছাল উঠা, মীনচর্ম বা মাছের আশের মতো চামড়ার জন্য এই তেল খুব উপকারি। বিশেষ করে মানুষের স্কিন কেয়ার অয়েল হিসাবে অ্যাভোকাডোর তেল খুবই কার্যকর।

অ্যাভোকাডোর তেলের ব্যবহার

উন্নত বিশ্বে অ্যাভোকাডোর তেল দিয়ে অ্যাভোকাডো সাবান, অয়েন্টমেন্ট, ক্রিম ও লোশন তৈরি করা হয়। এছাড়াও অ্যাভোকাডোর তেলের সরাসরি ব্যবহার রয়েছে।

আমেরিকা ও মেক্সিকোর পাশাপাশি ইদানিং বাংলাদেশেও অ্যাভোকাডোর চাষ শুরু হয়েছে। অ্যাভোকাডোর বীজ ও কলম থেকে চারা উৎপাদন করা হয়। দোআঁশ মাটিতে অ্যাভোকাডোর চাষ ভাল হয়। আশা করি এই লেখাটি পড়ে আরো অনেকেই এর চাষ করতে আগ্রহী হবেন। আর কোন বিষয়ে জানতে চাইলে কমেন্ট করবেন।

আরো পড়ুন- ভরা পেটে সহবাস করলে কি হয়

Leave a Comment