বহেরার উপকারিতা জানলে রীতিমতো অবাক হবেন, ৪০-৫০ টাকা কেজি বহেরার এতো গুণ! অথচ উপকারী এই ঔষধি ফল সম্পর্কে আমরা জানিই না। ত্রিফলার অন্যতম একটি উপাদান বহেরা কেন খায় জেনে নিন।
ইংরেজী নাম : Beleric বৈজ্ঞানিক নাম : Terminalia belerica
বহেরার ঔষধিগুণ বা বহেরা কেন খায়
বহেরা ফল ও ফলের মজ্জা ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। রক্ত আমাশয়ে বহেরার গুঁড়া সকাল বিকাল পরিমাণ মতো পানিসহ খেলে উপকার পাওয়া যায়। এ গাছের ফল কোষ্ঠকাঠিন্য, জন্ডিস, কাশি এবং রক্তক্ষরণ বন্ধে ব্যবহৃত হয়। ফলের ভেতরের অংশে ডায়রিয়া, আমাশয় এবং পাইলস নিরাময়ের জন্য বেশ কার্যকরী। আর বীজ থেকে উৎপাদিত তেল মালিশ করলে বাত সেরে যায়।
বহেরার বীজের তেল কি কাজ করে
সবচেয়ে বড় উপকারিতা হলো- বহেরার বীজের তেল শ্বেতী রোগের মহৌষধ। এছাড়াও বহেরার বীজ খেলে পুরুষের যৌনশক্তি বা রতিশক্তির উন্নতি হয়। ত্রিফলার অন্যতম একটি উপাদান বহেরার আচার লিভার ফাংশনাল ডিসঅর্ডারে চমৎকার কাজ করে। বহেরার উপকারিতা বলে শেষ করা যাবেনা।
বহেরার বীজের উপকারিতা কি
বহেরার বীজকে বহেরার বাদাম বলেও ডাকা হয়। এটি খেতে বাদামের মতই, এবং তা থেকে তেলেও হয়। এই বীজের শাস যৌন দূর্বলতায় দারুন কাজ করে। বীর্য ঘাঢ় করতে এই বীজ খুবই কার্যকরী। নিয়মিত প্রতিদিন সকালে ১ মুঠো খেলে লিঙ্গের শিথিলতা ও দূরবলতা দূর হয়।
বহেরার পরিচিতিমূলক তথ্য
রোপণ মৌসুম- বহেরা বৃহদাকার পত্রমোচি বৃক্ষ। পাতা একান্তার ও ডালের শীর্ষে জড়োভাবে থাকে। পাতা লম্বাটে ১৮ থেকে ২০ সেন্টিমিটার হয়। পাতার বোঁটা লম্বা। শীতকালে মাঘ-চৈত্র মাসে পাতা ঝরে যায়। ফল গোলাকার। প্রতি ফলে একটি বীজ থাকে।
চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম ও ময়মনসিংহের বনাঞ্চলে বহেরা গাছ পাওয়া যায়। গ্রামাঞ্চলেও বেশ কিছু গাছ দেখা যায়। শুকনো জমিতে ও পাহাড়ের ঢালে বহেড়ার চাষ করা হয়। পৌষ থেকে চৈত্র মাস পর্যন্ত পাকাফল সংগ্রহ করে, সে ফল ৪৫ থেকে ৫০ ঘন্টা ভিজিয়ে পলিব্যাগে রোপণ করে চারা তৈরি করা যায়। ৩ থেকে ৪ মাস বয়সী চারা মাঠে লাগানোর জন্য উপযুক্ত।
উৎপাদন এলাকা : চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম ও ময়মনসিংহের বনাঞ্চলে পাওয়া যায়৷
বহেরার ব্যবহার
ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক ওষুধ তৈরি করার ক্ষেত্রে বহেরা প্রচুর ব্যবহৃত হয়ে থাকে। প্রায় ৬০-৭০% হারবাল, ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক ঔষধে বহেরার ব্যবহার হয়ে থাকে। কারন, বহেরার উপকারিতা এতো বেশী যে, বহেরাকে ছাড়া যেন হারবাল পথ্য অপূর্ণ থেকে যায়।