শরীরও চাঙ্গা থাকে এবং দুর্বল ভাব আসে না। করসল এর উপকারিতা রক্তকে শোধিত করতেও এই ফলের গুণ অনস্বীকার্য। করসল শুধু ফলই নয়, এই গাছের ছাল ও পাতায় লিভার সমস্যা, আর্থরাইটিস ও প্রোসটেট সমস্যাও নিরাময় হয়ে যায়। আসুন জেনে নেই করসল এর উপকারিতা কি।
ক্যানসার প্রতিরোধে করসল এর উপকারিতা ফল ও পাতার বেশ উপকারী বলে দাবি করেছেন গাজী আলী আশরাফ। বিশ্বের সমাদৃত ম্যাগাজিন ফুড এণ্ড ফাংশন এ প্রকাশিত লেখাতে বলা হয়েছে, করোসল ফল বা টক আতার ফাইটনট্রিয়েন্টগুলো ক্যান্সার সৃষ্টিকারী কোষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে এবং টিউমারের বৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করে।
করসল এর উপকারিতা
চিকিৎসা বিজ্ঞানের সমর্থন না থাকলেও করোসল ফল, করোসল গাছের পাতা ও ছাল ক্যান্সার প্রতিরোধী জাদুকরী গুণাগুণ রয়েছে এবং ক্যান্সাররোগীর কেমোথেরাপির বিকল্প চিকিৎসা এমন সংবাদ দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়ায় করোসল গাছের চারা কেনার জন্য মানুষ ভীড় করছে সাতক্ষীরার বিভিন্ন নার্সারীগুলোতে।অসমর্থিত সূত্র জানায়, করোসল ফল ও করোসল গাছের পাতা ক্যান্সার প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে। এই করোসল ফল ও করোসল গাছের পাতার রস খেলে ক্যান্সাররোগীর কেমোথেরাপির প্রয়োজন হয় না। এই ফল ও পাতার রস ক্যান্সার সেলের মৃত্যু ঘটাতে কেমোথেরাপির চেয়ে এটি ১০ হাজার গুণ বেশি শক্তিশালী। করোসল গাছে রয়েছে অ্যানোনাসিয়াস অ্যাস্টোজেনিন নামে এক ধরনের যৌগ। এই যৌগ ক্যান্সারের কোষের বৃদ্ধিরুখে দেয়, যা কেমোথেরাপি করে। ফলে ক্যান্সার কোষ আর বাড়তে পারে না।
আরো পড়ুনঃ ই ক্যাপ এর উপকারিতা ও অপকারিতা
করসল খেলে কি হয়
করসল ফল বিশেষ করে স্তন ক্যান্সার, ফুসফুস ক্যান্সার, প্যানক্রিয়াটিক ক্যান্সার, লিভার ক্যান্সার, প্রোসটেট ক্যান্সারে এটি বেশি কার্যকর। এছাড়া নিয়মিত এই ফল খেতে পারলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেকটা বেড়ে যায়। যিনি একজন ক্যান্সার রোগী এবং কেমোথেরাপি নিয়েছেন। একই সঙ্গে করসলের পাতার রসও খাচ্ছেন। তিনি বলেন, আমি একবার করসল ফল খেয়েছি। এর পাতার রস এখনো সপ্তাহে একবার খাই। করোসল পাতার রস অত্যন্ত এন্টি অক্সিডেন্টাল।তিনি আরও বলেন, করসল ফল তো আমাদের দেশে দুষ্প্রাপ্য। তাই করসলের পাতার রস খেতে শুরু করি। প্রতিদিন তিন বেলা করসল পাতা পানি দিয়ে জ্বালিয়ে চায়ের মতো করে খেতাম।
আরও পড়ুনঃ সিঙ্গার স্মার্ট টিভির দাম কত টাকা 2024
করসল ফল গাছের দাম
সাতক্ষীরার নার্সারীগুলো ৫০ টাকা দামের করোসল গাছের চারা এখন বিক্রি করছে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকায়। ক্রেতারা লাইন দিয়ে সেই করোসল গাছের চারা কিনতে নার্সারীতে ভীড় জমাচ্ছে। এদিকে করোসল নিয়ে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য সতর্কতামূলক বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে সাতক্ষীরা স্বাস্থ্য বিভাগ।ডিম্বাকৃতির এই ফল ১২ ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা হতে পারে এবং একটি মাঝারি দৃঢ় গঠনবিন্যাস রয়েছে করোসল ফল রসালো, অ্যাসিডিক, সাদাটে এবং সুগন্ধযুক্ত। ফলটিতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে ভিটামিন সি, ভিটামিন বি-১ এবং ভিটামিন বি-২ রয়েছে।
করসল গাছের বীজ সংগ্রহ
২০১২ সালে থাইল্যান্ড থেকে এবং ২০১১ সিঙ্গাপুর থেকে বীজ সংগ্রহ করে নিজ বাড়িতে ৭টি চারা তৈরি করেছিলেন গাজী আলী আশরাফ। এর মধ্যে ৬টি ফলবান করসল গাছ এখনো বেঁচে আছে। নিজের লাগানো করসল বা টক আতা গাছ থেকে দীর্ঘ সাত বছর পর প্রথমবার ফল পান তিনি। যার একটির ওজন হয়েছিল এক কেজি ২৭ গ্রাম। গায়ে কাঁটাযুক্ত করসল ফলের ভেতরটা অনেকটা আতার মতোই। করোসল ফলটি গ্রাভিওলা, সাওয়ারসপ, গুয়ানাবা, গুয়ানাভানা, ব্রাজিলিয়ান পাও পাও ইত্যাদি নামে পরিচিত।এই করসল বা টক আতা গাছ নিয়ে দীর্ঘ ১০ বছর যাবত পরীক্ষা নিরীক্ষা করছেন সাতক্ষীরা শহরের মুনজিতপুরের গাজী আলী আশরাফ।
করসল ফল এর উদাহরণ
করোসল ফলটি গ্রাভিওলা, সাওয়ারসপ, গুয়ানাবা, গুয়ানাভানা, ব্রাজিলিয়ান পাও পাও ইত্যাদি নামে পরিচিত। এর মধ্যে থাকা আনোনাসিয়াস এসেটোজেনিন নামক এক ধরনের যৌগ রয়েছে যা ক্যানসার কোষের অস্বাভাবিক বৃদ্ধিতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। এটি ক্যানসার কোষে শক্তি সরবরাহ বন্ধ করে দেয় এবং রক্তপ্রবাহ আটকে দেয়।করোসল অ্যানোনা মিউরিকাটা গোত্রের একটি ফল যা অনেক ক্ষেত্রেই ক্যামোথেরাপির কাজ করে থাকে। ক্যান্সারের প্রতিষেধক হিসেবে এ ফলের পক্ষে বিশেষজ্ঞদের বহুবিদ মতামত পাওয়া যায়। অনেক দেশেই এ ফলটি ক্যান্সার প্রতিরোধক ফল হিসেবে পরিচিত।
তবে করোসল গাছে এখনো ফল ধরেনি। এটি ক্যান্সার, কিডনি, হার্ট লিভার পরিষ্কার এর জন্য বিশেষ উপকারী। আমেরিকাতে এই গাছের পাতা ও ফল ভাল দামে বিক্রি করা হয়। ফল ও পাতা খেলে ক্যান্সারের মতো কঠিন রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। করোসল চাষ করলে ক্যান্সার রোগীদের ক্যামোথেরাপির জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করতে হবে না।
যদিও ক্যান্সার গবেষণা ইউকে এ সম্পর্কে একটি বিবৃতিও প্রকাশ করেছে, যাতে বলা হয়েছে, সামগ্রিকভাবে, গ্রাভিওলা বা করোসল ক্যান্সারের নিরাময়ের জন্য কাজ করে এমন কোনো প্রমাণ নেই। পরীক্ষাগার গবেষণায় গ্র্যাভিওলা সূত্রগুলি কিছু ধরনের লিভার এবং স্তন ক্যান্সারের কোষকে মেরে ফেলতে পারে যা নির্দিষ্ট কেমোথেরাপির ওষুধের বিরুদ্ধে প্রতিরোধী। তবে এর চেয়ে বড় কোনো চিহ্ন এখনও পাওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে বড় কোনো স্টাডি নেই। তাই আমরা এখনও জানি না এটি ক্যান্সারের চিকিৎসা হিসেবে কাজ করতে পারে কি না।
করসল ফল এর দাম ওজন
করসোল গাছের প্রতিটি ফল ২৫০ গ্রাম ওজনের হয়। ফলটির মূল্য ৪৫ থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়। এর গাছের পাতাও অনেক উপকারি। এই ঔষধি গাছটি দেশ-বিদেশে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।এই ফলের জন্যে ৫-৬.৫ মাত্রার মাটি সবচেয়ে উপযোগী। মাটিতে নিষ্কাশন ব্যবস্থা ভালো থাকতে হবে। বেলে মাটি এই ফলের জন্যে সবচেয়ে উপযুক্ত হিসেবে বিবেচনা করা হয়।কাঁঠালের মত কাঁটা যুক্ত সবুজ রঙের করোসল ফল। করোসল গাছের সবুজ পাতার ফাঁকে হলুদ রঙের ফুল ধরে। ফুল ফোঁটার পর লাভ আকৃতির তিনটি খোসা ফেটে গিয়ে ভেতর থেকে করোসল ফল বের হয়। ছোট ছোট করোসল ফলের পাশাপাশি বড় ফলও গাছে দেখা যায়। প্রতিটি ফলের ওজন হয় ৪শ গ্রাম থেকে এক কেজি। করোসল ফল এবং গাছের পাতা পানিতে চুবিয়ে খাওয়ার পর ক্যানসার আক্রান্ত রোগী ভালো হয়ে যায়।
আশা করছি করসল এর উপকারিতা কি এই সম্পর্কে বিস্তারিত বুঝতে পেরেছেন। Pustigoon সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।