মৌসুমি ফলের উপকারিতা কি

মৌসুমি ফলের পুষ্টি উপাদান দেহের রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে তাই মৌসুমি ফলের উপকারিতা অনেক। গ্রীষ্মকালে আমাদের দেশে প্রচুর ফল পাওয়া যায়। বৈচিত্র্যপূর্ণ আর রসাল সব ফলে সমারোহ ঘটে এ সময়। 

গ্রীষ্ম, বর্ষা ও শরৎ এই তিন ঋতুতে বাংলাদেশে বিভিন্ন রকমের ফল পাওয়া যায়। জ্যৈষ্ঠ ও আষাঢ় মাসে আম, জাম, কাঁঠাল, আনারস, তাল উঠে। বৈশাখের মাঝামাঝি থেকে জ্যৈষ্ঠের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত লিচু পাওয়া যায়। বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাস আম, কাঁঠাল ও লিচুর মৌসুম আর শীতের শেষে বসন্তকালে তরমুজ, ফুটি, বেল এসব ফলের মৌসুম শুরু হয়। এ সময় জামরুল, সফেদা ইত্যাদি ফলও বাজারে পাওয়া যায়। ফলের মধ্যে প্রয়োজনীয় এন্টি-অক্সিডেন্ট, ভিটামিন বি এবং খনিজ লবণ থাকে যা দেহকে সতেজ রাখতে সাহায্য করে। ফল সুস্বাদু ও পুষ্টিকর।

মৌসুমি আম ফলের এর উপকারিতা

পুষ্টিমান সমৃদ্ধ অত্যন্ত মিষ্টি সুস্বাদু ও সুন্দর গন্ধযুক্ত এবং রসালো ফল আম। আম কেবল মিষ্টি স্বাদের জন্যই নয় বরং এর পুষ্টিকর বৈশিষ্ট্যের জন্যও পরিচিত। আমে যে কপার থাকে তা রক্ত তৈরিতে সাহায্য করে। দেহে ক্যান্সার প্রতিরোধে বলিষ্ট ভূমিকা পালন করে।আমে আছে প্রচুর পরিমাণে এ, বি, সি আয়রন, পটাশিয়াম, সোডিয়াম, কপার। চোকের দৃষ্টি শক্তি প্রখর রাখে এবং রাতকানা রোগ প্রতিরোধ করে। হজম শক্তি বৃদ্ধি করে। তাজা আম পটাশিয়ামের ভালো উৎস। আমে প্রিবায়োটিক খনিজ পদার্থ ও অ্যান্টি অক্সিডেন্টের মতো গুরুত্বপূর্ণ উপাদান আছে। আম কোলেস্টেরল হৃদরোগ, স্ট্রোকের ঝুকি কমায়, যকৃতের কার্যকরতা সবল করে।

আর পড়ুনঃ চার্জার ফ্যানের দাম কত ২০২৪

লিচু এর উপকারিতা

লিচু মিষ্টি গন্ধ ও স্বাদের রসাল ফল লিচুতে রয়েছে শর্করা, প্রোটিন, ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন সি। এতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা প্রবল রাখতে ভূমিকা রাখে।  মিষ্টি স্বাদের এই ফল দেহের তৃষ্ণা মেটায় ও শক্তি বাড়ায়। হার্বাল-বিশেষজ্ঞরা বলে থাকেন, দু’বেলা চার-পাঁচটি করে লিচু খেলে বয়স বাড়লেও শরীরের লাবণ্য বজায় থাকে। । শক্ত খোসার আবরণে ঢাকা মিষ্টি নরম মাংসাল এ ফল যে কোনো বয়সের মানুষেরই পছন্দের ফল।

কাঁঠাল ফল

রসাল ও সুমিষ্ট স্বাদের ক্যারোটিন সমৃদ্ধ এই ফলে প্রোটিন, ভিটামিন সি ও পটাশিয়াম আছে। ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও বি ভিটামিনেরও ভালো উৎস এটি। এ জনপ্রিয় ফলটিতে আমিষ, শর্করা, ভিটামিন এ, বি, সি, পটাশিয়াম, আয়রণ, জিংক একটু বেশি থাকে। আমাদের জাতীয় ফল কাঁঠাল। কাঁচা ও পাকা দু’ভাবেই কাঁঠাল খাওয়া হয়। কাঁচা কাঁঠালকে এ্যঁচোড় বলে, যা তরকারি হিসেবে বেশ সুস্বাদু।  অন্যদিকে অ্যাজমা, কাশি কিংবা সর্দির ক্ষেত্রেও কাঁঠাল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সঙ্গে সেরে উঠতেও বেশ কার্যকর।

আর পড়ুনঃ হাতিশুর গাছের উপকারিতা কী

জাম ফলের উপকারিত

 কালো জামের অ্যান্থোসায়ানিন হৃদ্‌রোগ ও ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়। পটাশিয়াম উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। জামের রস ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খুবই উপকারী। জামের কচি পাতা বেটে খেলে পেটের অসুখ ভালো হয়।শর্করা কম থাকায় এবং খাদ্য–আঁশের উপস্থিতির কারণে কালো জাম খাওয়ার পর রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে।জামের খনিজ লবণ হাড়কে শক্তিশালী ও মজবুত করতে সাহায্য করে। এ কারণে ডায়াবেটিস রোগীরা প্রতিদিনই কালো জাম খেতে পারেন।

আনারস খাওয়ার উপকার

মধুর রসে টুইটুম্বর সুমিষ্ট গন্ধ ও পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ আনারস অতুলনীয়। আনারসে প্রচুর পরিমাণে এ, বি, সি পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, ক্যালসিয়াম ও ফলেট থাকে। আনারস ক্ষিদে বাড়ায় ও রুচি আনতে সাহায্য করে। সামান্য লবণ ও গোলমরিচ মাখিয়ে খেলে আনারসের স্বাদ অনেকগুণে বেড়ে যায়। যারা জ্বরে ভুগছেন তারা নিয়মিত আনারসের রস খেতে পারেন। সুস্বাদু ও ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল আনারস। সর্দি-কাশিতেও আনারস খেলে উপকার পাওয়া যায়। এছাড়া কৃমি সারাতে আনারস খুবই কার্যকরী।দেহের হাঁড় ও জোজক কলাগুলোকে শক্তিশালী করে এবং দেহে শক্তি উৎপন্ন করে। দেহকে কৃমি মুক্ত রাখতে আনারাস সাহায্য করে।

গ্রীষ্মকাল মানেই মুখরোচক ফলের সমাহার। স্বাদের দিক থেকেও এসব ফল যেমন অতুলনীয় তেমনি গুণের দিক থেকেও। গ্রীষ্মের এ সময়ের আরেকটি ফল হচ্ছে তরমুজ। প্রচণ্ড গরমে স্বস্তি ফেরাতে এ ফলের তুলনা নেই। তাই তরমুজের জুস কাঁচা আমের জুসের মতোই সমান জনপ্রিয়।এছাড়া হার্টের সুরক্ষায় কাঁঠাল ও লিচু বেশ কার্যকরী। কারণ কাঁঠালে থাকা পটাসিয়াম, ফাইবার এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান হার্টকে সুস্থ্য রাখে।আমাদের চারপাশে কিছু উদ্ভিদ আছে যেগুলো বড় বড় বৃক্ষ আর কিছু উদ্ভিদ রয়েছে লতার মতো। যা মাটিতে শুয়ে থাকে। এগুলোর মধ্যে এসব মৌসুমী ফলফলাদি সৃষ্টি করেছেন।ফলগুলো শরীরের পুষ্টি চাহিদা পূরণের পাশাপাশি রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও বেশ সহায়ক।

আশা করছি মৌসুমি ফলের উপকারিতা কি এই সম্পর্কে বিস্তারিত বুঝতে পেরেছেন PustiGoon সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।

Leave a Comment